স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহঃ
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পিংকি খাতুনসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে লাবনী নামে একজন হিজড়া হত্যার অভিযোগে খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে (যার পিটিশন নং ৬৯/২০, স্মারক নং ৬৪৯)। নিহত লাবনী চুয়াডাঙ্গার দর্শনা এলাকার স্বস্থিপুর গ্রামের আব্দুল জলিল মন্ডলের সন্তান। ঝিনাইদহ শহরের চাকলাপাড়ার মৃত আলীজান মীরের সন্তান বর্ষা মীর (তৃতীয় লিঙ্গ) গত মঙ্গলবার বাদী হয়ে ঝিনাইদহের একটি আদালতে মামলাটি করেন। কোটচাঁদপুরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিজ্ঞ বিচারক তানিয়া বিনতে জাহিদ পিটিশন মামলাটি এজাহার হিসেবে গণ্য করার জন্য কোটচাঁদপুর থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন। মামলায় অন্যান্য আসামীরা হলেন, ঝিনাইদহ শহরের কাঞ্চননগর গ্রামের ইসারত আলীর হিজড়া সন্তান আকাশী খাতুন, সদর উপজেলার বয়ড়াতলা গ্রামের আবু বকরের সন্তান প্রিয়ংকা খাতুন, ভুটিয়ারগাতি গ্রামের আব্দুর রহিম শেখের সন্তান আনোয়ারা খাতুন, কোটচাঁদপুরের বলুহর বাসষ্ট্যান্ডের কল।পনা খাতুন ও চুয়াডাঙ্গার দর্শনা এলঅকার নাস্তিপুর গ্রামের ফকির মোল্ল্যার সন্তান পায়েল ওরফে জুয়েল। আদালতে দায়ের করা এজাহার সূত্রে জানা যায়, আক্তার ওরফে লাবনী একজন পুরুষ ছিল। তার স্ত্রী ও দুইটি সন্তান রয়েছে। মামলার প্রধান আসামী পিংকি খাতুন প্রলোভন দেখিয়ে ৬ বছর আগে অপারেশনের মাধ্যমে আক্তার হোসেনকে হিজড়া বানায়। সেই থেকে আক্তার হোসেন হয়ে যায় লাবানী। হিজড়ায় রুপান্তরিত হওয়ার পর লাবনী অন্যান্য হিজড়াদের সাথে জীবিকা নির্বাহ করতে থাকে। এলাকা ভাগাভাগী নিয়ে নিহত লবনী, মামলার বাদী বর্ষা মীর ও অতিসম্পতি নিহত কারিশমা হিজড়ার সঙ্গে পিংকি খাতুনের চরম বিরোধ শুরু হয়। লাবনী কোটচাঁদপুর উপজেলা শহরের জনৈক হাসেম বিশ্বাসের বাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন। সেখানে তাকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়। এরপর বাসা পরিবর্তন করে একই শহরের বলুহর বাসস্ট্যান্ডের ভাড়া বাড়িতে বসবাস করতেন। গত ৭ জুন একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে লাবনী ওরফে আক্তারকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তাকে হাত পায়ের রগ কেটে হত্যা করে লাশ তড়িঘরি করে চুয়াডাঙ্গার দর্শনার নাস্তিপুর গ্রামে দাফন করা হয়। মামলার বাদী বর্ষা মীর অভিযোগ করেন, প্রধান আসামী পিংকি খাতুনের সঙ্গে বিরোধের কারণে আমিসহ দুই হিজড়া লাবনী ও কারিশমা তাকে কালীগঞ্জ শহরে মারপিট করি। সেখান থেকেই পিংকি আমাদের তিনজনকে হত্যার ছক আঁটে। সেই ছকেই প্রথমে লাবনী ও পরে কারশিমাকে খুন করে। আমাকেও সে খুনের জন্য অপহরণ করেছিল। বাদী বর্ষা মীর প্রশ্ন তুলে বলেন, হিজড়া হয়ে কি ভাবে পিংকি মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হয় ? এ বিষয়ে কোটচাঁদপুর উপজেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পিংকি খাতুন জানান, আমি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই আমার প্রতিপক্ষরা ষড়যন্ত্র করে আসছে। তার ধারাবাহিকতায় এই মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। মামলাটির সুষ্ঠ তদন্ত দাবী করে তিনি বলেন, ৩ বছর ধরে বর্ষা মীর নানা ধরণের মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের হয়রানী করে আসছে। কোটচাঁদপুর থানার ওসি মাহবুব আলম জানান, মামলা দায়ের হবার খবরটি আমি বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে দেখেছি। আদালতের আদেশ পাওয়ার পর মামলাটি রেকর্ড করা হবে বলে ওসি জানান।
#বিডিসি_নিউজ৭১/
#BDC_News71/