আজ মঙ্গলবার ⮞ ১০ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ⮞ ২৫শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম
  • ফরিদপুর বোয়ালমারীতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রীর পক্ষে পাঁচ শতাধিক কম্বল বিতরণ
  • পবিত্র কুরআনের হাফেজ হলেন ১০ বছরের শিশু ফাহমিদা জান্নাত ইভা
  • চুয়াডাঙ্গাতে ১০ বোতল বিলাতি মদ সহ ০১ জন আসামী আটক
  • লামায় ১৬ ডিসেম্বর উদযাপন উপলক্ষে প্রস্তুতি সভা
  • আলমডাঙ্গার চিৎলায় শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ উপলক্ষে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
  • যশোরের শার্শায় সড়ক দৃর্ঘটনায় নিহত১
  • চুয়াডাঙ্গায় মোটরসাইকেল-পাখিভ্যান মুখোমুখি সংঘর্ষে যুবক নিহত
  • দামুড়হুদার নতিপোতা ইউনিয়ন এপেক্স কমিটির অর্ধ বার্ষিকী সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত
  • প্রত্যাশা সামাজিক উন্নয়ন সংস্থার আয়োজনে ওষুধ, থেরাপি, সাধারন চিকিৎসা, অন্তর্ভুক্তিমুলক স্বাস্থ্য ও পূণবার্সন সেবা প্রদান বিষয়ক সভা অনুষ্ঠিত।
  • আলমডাঙ্গার চিৎলা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের উদ্যোগে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ উপলক্ষে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত।
  • ফাঁসির রায় কার্যকর হয়েছে বঙ্গবন্ধুর খুনি মাজেদের

    বিডিসি নিউজ৭১ ডেস্ক ::: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার দায়ে ক্যাপ্টেন (বরখাস্তকৃত) আব্দুল মাজেদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে রাত ১২ টা ০১ মিনিটে। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, রবিবার (১২ এপ্রিল) রাত ১২ টা এক মিনিটে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসি দড়িতে ঝুলিয়ে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
    এদিকে শনিবার (১১ এপ্রিল) রাতে কারা চিকিৎসক কারাগারের ভেতর ঢোকেন। এছাড়াও রাত সোয়া ১০টার দিকে ঢাকার সিভিল সার্জন এবং জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ঢাকা জেলার সিভিল সার্জন, একজন মাওলানা, একজন ইমাম কারাগারের ভেতরে যান। পরে রাত ১০টা ৫২ মিনিটে কারাগারে প্রবেশ করেন কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোস্তফা কামাল পাশা, জল্লাদ শাহজাহান ভূঁইয়ার নেতৃত্বে মো. আবুল, তরিকুল ও সোহেলসহ দশ সদস্যের একটি দল আব্দুল মাজেদের ফাঁসির রায় কার্যকর করেন বলে জানা গেছে। মো. শাহজাহান ভূঁইয়া দীর্ঘ ৪১ বছর ধরে কারাবন্দি। জল্লাদ শাহজাহান এর আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৫ ঘাতককে ফাঁসির দড়িতে ঝুঁলিয়েছেন।
    এছাড়া এদেশের কয়েকজন যুদ্ধাপরাধী, কুখ্যাত সন্ত্রাসী এরশাদ শিকদার, জঙ্গি নেতা বাংলা ভাই, আতাউর রহমান সানী, শারমীন রীমা হত্যা মামলার আসামি খুকু, মনির, ডেইজি হত্যা মামলার আসামিদের ফাঁসি কার্যকর করেন জল্লাদ শাহজাহান। এদেশে তিনিই একমাত্র জল্লাদ যিনি একরাতেই দুই কারাগারে ৪ আসামিকে ফাঁসি দড়িতে ঝুলিয়েছেন।
    খুনি মাজেদ কলকাতায় পলাতক ছিলেন : গত ২২-২৩ বছর ধরে ভারতে ছিলেন খুনি মাজেদ। সেখান থেকে চলতি বছর মার্চের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশে আসেন। এরপর থেকে তিনি ঢাকায় অবস্থান করছিলেন। পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট জানায়, ভারতের কলকাতায় আবদুল মাজেদ নিজেকে আবদুল মজিদ পরিচয় দিয়ে আত্মগোপনে ছিলেন। নব্বই দশকের মাঝামাঝি সময়ে মাজেদ প্রথমে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পালিয়ে যান। ভারত থেকে পালিয়ে প্রথমে যান লিবিয়ায়। সেখান থেকে যান পাকিস্তানে। লিবিয়া ও পাকিস্তানে সুবিধা করতে না পেরে আবারও ভারতে ফিরে যান। বিভিন্ন রাজ্যে অবস্থান করার পর ৩-৪ বছর ধরে কলকাতায় অবস্থান করছিলেন তিনি। সেখানে মাজেদ তেমন কিছু করতেন না। তবে বাংলাদেশে থাকা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়মিত যোগযোগ ছিল তার। করোনাভাইরাস আতঙ্কে ময়মনসিংহের সীমান্ত দিয়ে দেশে ফিরে আসেন তিনি। দেশে ফেরার পর মিরপুর ডিওএইচএসের এক নম্বর সড়কের ১০/এ বাসায় ওঠেন।
    আত্মীয়-স্বজনদের সাথে সাক্ষাৎ : এর আগে শুক্রবার (১০ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় স্বজনদের পাঁচ সদস্যের একটি দল কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে মাজেদের সঙ্গে দেখা করেন। সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান করেন। মাজেদের স্বজনদের মধ্যে ছিলেন স্ত্রী সালেহা, স্ত্রীর বোন ও বোন জামাই, ভাতিজা ও এক চাচা শ্বশুরসহ মোট পাঁচ জন।
    যেভাবে মাজেদকে গ্রেপ্তার করা হয় : এর আগে গত ৬ এপ্রিল দিনগত রাত ৩ টায় রাজধানীর মিরপুর থেকে আব্দুল মাজেদকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। আদালতে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) দেওয়া প্রতিবেদন অনুযায়ী, বঙ্গবন্ধুর খুনি মাজেদকে সোমবার দিবাগত রাত ৩ টা ৪৫ মিনিটে রাজধানীর গাবতলী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের উপপরিদর্শক (এসআই) আদালতে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, নিয়মিত টহলের অংশ হিসেবে তিনি দায়িত্বে ছিলেন। রাত ৩টা ৪৫ মিনিটে গাবতলী বাসস্ট্যান্ডের সামনে দিয়ে সন্দেহজনকভাবে রিকশায় করে যাওয়ার সময় ওই ব্যক্তিকে থামান। জিজ্ঞাসাবাদের সময় তিনি অসংলগ্ন কথা বলতে থাকেন। একপর্যায়ে তিনি নিজের নাম-ঠিকানা প্রকাশ করেন এবং বলেন, তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি। জিজ্ঞাসাবাদে মাজেদ আরও স্বীকার করেন, গ্রেপ্তার এড়ানোর জন্য ভারতসহ বিভিন্ন দেশে আত্মগোপন করে ছিলেন।
    আব্দুল মাজেদকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ : গত ৭ এপ্রিল বেলা সোয়া ১২টার দিকে তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার শুনানির ১ ঘণ্টা পর দুপুর ১টা ৫ মিনিটের দিকে তাকে প্রিজন ভ্যানে কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। শুনানির সময় খুনি মাজেদের পক্ষে আদালতে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।
    ফাঁসির পরোয়ানা জা‌রি : গত ৮ এপ্রিল আব্দুল মাজেদের বিরু‌দ্ধে মৃত‌্যুদ‌ণ্ডের সাজার প‌রোয়ানা জা‌রি ক‌রে‌ছেন আদালত। ওই দিন দুপু‌রে ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ মো. হেলাল চৌধুরী বঙ্গবন্ধু হত‌্যা মামলায় তা‌কে গ্রেপ্তার দে‌খি‌য়ে এ প‌রোয়ানা ইস‌্যু ক‌রেন। এদিন সকালেই রাষ্ট্রপ‌ক্ষে আইনজীবী মোশাররফ হো‌সেন কাজল প্রথ‌মে মা‌জেদ‌কে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখা‌নোর আবেদন ক‌রেন। ত‌বে আদালত বন্ধ থাকায় ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ কো‌নো পদ‌ক্ষেপ না নি‌তে পারার বিষয়‌টি সু‌প্রিমকো‌র্টের নজ‌রে আনেন। সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন এরপর ওই বিচারকের ছুটি শুধু ৮ এপ্রিলের জন‌্য বা‌তিল ক‌রেন। এরপর আদালত মা‌জে‌দের বিরু‌দ্ধে প্রডাকশন ওয়া‌রেন্ট (হা‌জিরা প‌রোয়ানা) ইস‌্যু ক‌রলে তাকে কেরানীঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগার থে‌কে পুরান ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদাল‌তে হা‌জির করা হয়। এ সময় আদালত প্রথ‌মে তা‌কে গ্রেপ্তার দেখা‌নোর আবেদন মঞ্জুর ক‌রেন।
    মাজেদ প্রাণভিক্ষা চেয়ে ছিলেন : গত ৮ এপ্রিল রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেছেন বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার আত্মস্বীকৃত খুনি মৃত‌্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন (বরখাস্তকৃত) আব্দুল মাজেদ। গত ৯ এপ্রিল আব্দুল মাজেদের প্রাণভিক্ষার আবেদন রাষ্ট্রপতি বাতিল করে দেন। পরে ওই চিঠি ওই দিনই কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
    বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা ও বিচার : ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবার নির্মমভাবে হত্যা করে একদল বিপথগামী সেনা সদস্য। ওই সময় বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান কেবল বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। নারকীয় এই হত্যাকাণ্ডের বিচারে পদে পদে বাধা আসে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরপরই দায়মুক্তি (ইনডেমনিটি) অধ্যাদেশ জারি করা হয়। ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালের ১২ নভেম্বর দায়মুক্তি আইন বাতিল করে আওয়ামী লীগ সরকার। ওই বছরের ২ অক্টোবর ধানমণ্ডি থানায় বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিগত সহকারী মহিতুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি করেন। ১৯৯৮ সালের ৮ নভেম্বর তৎকালীন ঢাকার দায়রা জজ কাজী গোলাম রসুল ১৫ জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়ে রায় দেন। নিম্ন আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের আপিল ও মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিতকরণের শুনানি শেষে ২০০০ সালের ১৪ ডিসেম্বর হাইকোর্ট দ্বিধাবিভক্ত রায় দেন। ২০০১ সালের ৩০ এপ্রিল হাইকোর্টের তৃতীয় বেঞ্চ ১২ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে তিনজনকে খালাস দেন। এরপর ১২ আসামির মধ্যে প্রথমে চারজন ও পরে এক আসামি আপিল করে। কিন্তু দীর্ঘদিনেও আপিল শুনানি না হওয়ায় বিচার প্রক্রিয়া আটকে যায়। দীর্ঘ ছয়বছর পর বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় আপিল বিভাগে একজন বিচারপতি নিয়োগ দেওয়ার পর বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলাটি ফের গতি পায়। ২০০৭ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. তাফাজ্জাল ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচ আসামির লিভ টু আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। আপিলের অনুমতির প্রায় দুই বছর পর ২০০৯ সালের অক্টোবরে শুনানি শুরু হয়। ২০০৯ সালের ১৯ নভেম্বর সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ পাঁচ আসামির আপিল খারিজ করেন। ফলে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের নৃশংসভাবে হত্যার দায়ে হাইকোর্টের দেওয়া ১২ আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল থাকে। এভাবে ১৩ বছর ধরে চলা এই মামলার বিচার প্রক্রিয়া শেষ হলে দায়মুক্ত হয় বাংলাদেশ।
    এখন পর্যন্ত ফাঁসি কার্যকর হয়েছে যাদের : ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি দিবাগত রাতে সৈয়দ ফারুক রহমান, বজলুল হুদা, এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদ, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান ও মুহিউদ্দিন আহমেদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। আর ওই রায় কার্যকরের আগেই ২০০২ সালে পলাতক অবস্থায় জিম্বাবুয়েতে মারা যায় আসামি আজিজ পাশা।
    পলাতক যারা এখন পর্যন্ত : মাজেদ গ্রেফতার হওয়ার পর এখন বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচ খুনি পলাতক । তারা হল- খন্দকার আবদুর রশীদ, শরিফুল হক ডালিম, মোসলেম উদ্দিন, এসএইচএমবি নূর চৌধুরী ও এএম রাশেদ চৌধুরী। এরা সবাই সাবেক সেনা কর্মকর্তা। এই পাঁচ খুনি বিভিন্ন দেশে পলাতক অবস্থায় আছে। তাদের ফিরিয়ে আনতে দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার।

    বিডিসি নিউজ৭১/

    BDC News71/

    Total Page Visits: 1851 - Today Page Visits: 1

    বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস

    বাংলাদেশে

    আক্রান্ত
    সুস্থ
    মৃত্যু

    বিশ্বে

    আক্রান্ত
    সুস্থ
    মৃত্যু

    Recent Posts